জিআই স্বীকৃতির দৌড়ে এবার বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ : জোড়ালো হচ্ছে দাবী

13th August 2021 1:58 pm বাঁকুড়া
জিআই স্বীকৃতির দৌড়ে এবার বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ : জোড়ালো হচ্ছে দাবী


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) :  জি.আই স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলা প্রসিদ্ধ রসগোল্লা বা বর্ধমানে মিহিদানা ঠিক সেভাবেই জি.আই স্বীকৃতি পাক বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ এমনটাই দাবি বেলিয়াতোড় এর মেচা সন্দেশ দোকানদারদের ।

খাদ্য রসিক বাঙালি যেখানেই ঘুরতে যাক দর্শনীয় স্থানের পাশাপাশি খাবার খোঁজ ঠিকই রাখেন। আর সে খাবার যদি মিস্টি হয় তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। পর্যটকেরা যারা বাঁকুড়া বা পুরুলিয়া জেলার দর্শনীয় স্থান গুলি ঘুরতে যায় তারা বেলিয়াতোড়ের পাশ দিয়ে অবশ্যই যায়, তারা কি আর বিখ্যাত এই 'মেচার' স্বাদ গ্রহন না করে যায়, একবার হলেও মনে পড়ে যায় দূর থেকে কল্পনার এই বিখ্যাত মিষ্টির কথা।

পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার সবচেয়ে বিখ্যাত মিষ্টি হলো মেচা সন্দেশ। বাঁকুড়া জেলার পাশাপাসি এই মিষ্টান্ন নজর কেড়েছে সারা বাংলার, এমন কি বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে এই মিষ্টি। মূলত মুগডাল আর চিনি দিয়ে তৈরি হয় এই সন্দেশ সাথে ক্ষির বা চাঁছিও মেশানো হয়, দাম কোনোটি ১০ টাকা পিস তো কোনোটি ৫ টাকা।

এই মেচার আদি শ্রষ্টাকে এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারনা কোথাও আজও পাওয়া যায়নি, এই নিয়ে মতো বিরোধ আজও চলছে। তবে বেলিয়াতোড়ের মেচা প্রস্তুতকারকদের মতে এই মেচার ইতিহাস প্রায় দেড়শো থেকে দুইশো বছরের।এরকম জনশ্রুতি প্রায় শোনা যায় যে বিষ্ণুপুরের মল্লরাজাদের দেওয়ান রাজার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন বেলিয়াতোড়ের জমিদারি। সেই সময় নাকি প্রথম মেচা প্রস্তুতি শুরু হয় এবং 'জমিদারী মিষ্টির' উপাধি পায় এই সন্দেশ। একটা মত অনুযায়ী অনেকেই বলে থাকেন এই মেচার শ্রষ্টা নাকি গিরিশ চন্দ্র মোদক নামে এই পরগনার একজন মিষ্টান্ন ব্যাবসায়ী। কথিত আছে তখনকার দিনে এই জেলার বিভিন্ন জায়গায় বাবা শিবকে কেন্দ্র করে গাজনের মেলা বসত সেখানে এই গিরিশ বাবু গুড়ের লাড্ডু বিক্রি করতেন, দীর্ঘদিন রাখার পর সেই গুড়ের পাগ নষ্ট হয়ে যেত সেখান থেকেই অভিনবত্ব আসে তৈরি শুরু হয় মেচা সন্দেশের। ইংরেজ আমলেও নাকি এই প্রসিদ্ধ মেচা সন্দের খ্যাতি লাভ করে। এই মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারকদের আদি বাসস্থান বেলিয়াতোড় হলেও তারা বর্তমানে জেলা এবং রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে বিদ্যমান।

তবে ইতিহাস যাইহোক স্বাদে এবং অভিনবত্বে বাংলায় এই মিষ্টান্নর জুড়ি মেলা আজও ভার। বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের এই মেচার ব্যাবসায়ী থেকে শুরু করে প্রস্তুত কারকদের দাবী আধুনিক যুগের ঘেরাটোপে যেভাবে জি.আই স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলা প্রসিদ্ধ রসগোল্লা বা বর্ধমানে মিহিদানা ঠিক সেভাবেই জি.আই স্বীকৃতি পাক এই বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ ।





Others News

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা

মল্লরাজ ভূমিতে তোপধ্বনিতে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ : পুজো ঘিরে উন্মাদনা


দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : তোপধ্বনি তে কেঁপে উঠল বিষ্ণুপুর । শুরু হল মল্ল রাজাদের ১০২৫ বছরের অষ্টমী পূজোর সন্ধিক্ষণ।

প্রাচীণ ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে আজও নিষ্ঠাভরে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে দেবী দুর্গা 'মৃন্ময়ী নামে পূজিতা হন। জানা গিয়েছে, পূর্ব প্রথা মতোই প্রাচীণ রীতি মেনে মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে কামান দাগার মধ্য দিয়ে বিষ্ণুপুর রাজ বাড়িতে শুরু হয়ে গেল 'বড় ঠাকরুনে'র পুজো। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দর্শক সাধারণের উপস্থিতি ছিল বাঁধভাঙ্গা। সরকারী নিয়মকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে দেবী বন্দনা। এমনকি এখানে কামান দাগার পর্বেও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে অল্প সংখ্যক লোককে নিয়ে ঐ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

শুরুর সময় থেকে অষ্টমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করা হয় বড় কামানের গর্জনের শব্দে। যার আওয়াজে রাজবাড়িতে আরতি নৃত্যও শুরু হয়ে যায়।